মোঃ বিলাল উদ্দিন,বিশেষ প্রতিনিধিঃ-
সেনবাগে উপজেলার ৮ নং বিজবাগ ইউনিয়নের কাজিরখীল গ্রামে আলোচিত গণধর্ষণের ঘটনায় জোসনা বেগম নামে এক নারী বাদী হয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর সেনবাগ থানায় গণধর্ষণে অভিযুক্ত ৪ জন সহ ১১ জনের নামে মামলা করে,কিন্তু ধর্ষণের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত মূল ধর্ষণকারী দর্জি দোকানদার রুহুল আমিন মাষ্টার নামে একজন বাদ পড়ে যায়।
মামলায় এজহারে উল্লেখিত স্কুল শিক্ষক (অবঃ) আবদুল হক মাষ্টার যিনি শলিসি বৈঠকে উপস্থিত থাকায় এজহারে নাম চলে আসে।
অনুসন্ধানে জানা যায় গত ৬ই সেপ্টেম্বর নোয়াখালী জেলার সেনবাগ থানার অধীনস্থ কাজিরখীল গ্রামে গণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মূল ধর্ষণকারীরা হচ্ছে দিদার, রুহুল আমিন ওরপে মাষ্টার(টেইলার্স কাটিং মাস্টার যে কারনে অত্র এলাকায় তাকে সবাই মাষ্টার বলে ডাকে), গফুর, সেলিম ও আলমগীর।
দিদার ছাড়া উক্ত ধর্ষণকারীরা সবাই সেনবাগ থানার অধীনস্থ বীরনারায়নপুর (বীরপাড়া)গ্রামের বাসিন্দা।
গত ১১ই সেপ্টেম্বর মামলার বাদীনি সেনবাগ থানায় নারী নির্যাতন আইন ২০০০ মামলা দায়ের করে।
কিন্তু ধর্ষণকারীরা বাদীনির স্বামীর প্বাশের এলাকার হওয়ায় বাদীনি ধর্ষণকারী অনেকের নাম ও ঠিকানা জানতেন না।
মামলায় ধর্ষণকারীদের নাম জানার জন্য কাজিরখীল গ্রামের মামলার ১১ নাম্বার আসামী পারে জাহান মুন্নি নামের একজনের সাহায্য নেয়।
রুহুল আমিন ওরফে মাষ্টার মুন্নির দুলাভাই হওয়ার কারণে কৌশলে মামলার এহজাহারে মূল ধর্ষণকারী রুহুল আমিন ওপরে মাষ্টারের নাম না দিয়ে আবদুল হক মাস্টারের নাম দিয়ে দেয়।
উক্ত মামলার এজহার অনুযায়ী ৭ই সেপ্টেম্বর ১নং আসামী দিদারের বাড়ির দরজায় দিদার ও জোসনার পরকিয়ার শালিস অনুষ্টিত হয়।শালিসে ধর্ষণের বিষয়টি বাদীনি বলেনি।
বাদীনি শালিস থেকে উপযুক্ত বিচার পায় নাই মর্মে মামলা দায়ের করে।পরে শোনা যায় শালিস হওয়ার আগের দিন রাতে বাদী নি দিদার,রুহুল আমীন মাস্টার, আলমগীর গফুর,সেলিম মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
শালিসে উপস্থিত থাকা ও রুহুল আমীন মাষ্টার সন্দেহে সেনবাগ থানা পুলিশ ১০ই সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে স্কুল শিক্ষক আবদুল হক মাষ্টারকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। আবদুল হক মাষ্টার বর্তমানে হৃদরোগ ও পায়ের বাত জনিত কারণে নোয়াখালী কারা কতৃপক্ষ কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ জেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
গত ২৩ই সেপ্টেম্বর নোয়াখালী দায়রা জর্জ আদালতে শারীরিক অসুস্থতা ও বয়োবৃদ্ধ বিবেচনায় স্কুল শিক্ষক (অবঃ) আবদুল হক মাষ্টারের পক্ষে শুনানি হয়।
উক্ত শুনানিতে দায়রা জর্জ আদলত ১নং আসামী দিদারের ১৬৪ ধারা ম্যাজিস্টেট আদালতে জবানবন্দী আমলে নিয়ে স্কুল শিক্ষক আবদুল হক মাষ্টারকে মূল ধর্ষণের আসামী হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে জামিন নামঞ্জুর করে।
১নং আসামীর জবানবন্দীতে উল্লেখিত আছে যে মূল ধর্ষণের হোতা “গফুর, মাষ্টার, সেলিম ও আলমগীর” জবানবন্দীর প্রথম পাতায় আব্দুল হকের নাম মাষ্টার হিসেবে উল্লেখ করায় জামিন নামঞ্জুর করা হয়। মামলার এহজাহরে আব্দুল হক মাস্টার সালিশদ্বার হিসেবে ৮ নং আসামী।
১নং আসামীর জবানবন্দীর দ্বিতীয় পাতায় আবার বলা হয়েছে ” আব্দুল হকের কোন দোষ নেই সে শুধু সালিশে উপস্থিত ছিল।
প্রকৃতপক্ষে ১নং আসামীর জবানবন্দীতে উল্লেখিত মাস্টার হচ্ছে রুহুল আমিন মাস্টার, সে টেইলার্স কাটিং মাস্টার যে কারণে ডাকনাম হিসেবে সবাই মাস্টার বলে ডাকে। প্রধান আসামি দিদার তার জবানবন্দীতে হয়তো বলতে চেয়েছেন আব্দুল হকের নাম ও মাস্টার। সে কাটিং মাস্টারের প্রকৃত নাম রুহুল আমিন মাস্টার প্রধান আসামী পুরো নামটি জানতো না।
মামলার বাদীর সাথে কথা বলে এই বিষয়ে জানানো হলে সে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং প্রকৃত ধর্ষণকারী আসামি রুহুল আমিন মাস্টারের নাম না আসায় সে খুবই হতাশা প্রকাশ করেছে।
বাদিনী আরো দাবী করেছে রুহুল আমীন মাস্টারকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে জনাব আবদুল হক মাষ্টারকে মুক্তি দিতে।