২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকা সকল দুর্নীতির কারণ: বাংলাদেশ কংগ্রেসের আলোচনা সভায় বক্তারা

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০
সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকা সকল দুর্নীতির কারণ: বাংলাদেশ কংগ্রেসের আলোচনা সভায় বক্তারা

মোঃ আদম আলী ::

জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ করা, নির্বাচনের দিন দলীয় ক্যাম্প ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করা এবং নির্ধারিত স্থান ছাড়া পোস্টার টানানো ও সভা বন্ধের দাবীতে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকায় সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা ভর করছে।

 

ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন মিলনায়নে বাংলাদেশ কংগ্রেসের উদ্যোগে আজ ১২ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১০টায় উক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ কংগ্রেসের ভাইচ-চেয়ারমান এ্যাডঃ মোঃ শফিকুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ সকল প্রকার নির্বাচনে নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপ বন্ধের আহবান জানান।

 

বক্তৃতা দানকালে বাংলাদেশ কংগ্রেসের চেয়ারমান এ্যাডঃ কাজী রেজাউল হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান এবং তাদের মূল কাজ নির্বাহী বিভাগের সহায়তায় সকল প্রকার নির্বাচন পরিচালনা করা।

 

কিন্তু জেলা প্রশাসকদেরকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে তারা আত্মঘাতি কাজ করেন যাতে তাদের স্বাধীন স্বত্তা ক্ষুন্ন হয়। জেলা প্রশাসকরা নির্বাচন পরিচালনাকারী হতে পারেন না।

 

কারণ সাংবিধানিক বাধা আছে। সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে”। জেলা প্রশাসকগণ প্রজাতন্ত্রের নির্বাহী বিভাগে কর্মরত আছেন। তাই তারা নিজেরা সরাসরি নির্বাচন পরিচালক হতে পারবেন না।

 

বাংলাদেশ কংগ্রেসের মহাসচিব এ্যাডঃ মোঃ ইয়ারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত আলোচনা সভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনী প্রচারে জনদূর্ভোগ ও কালো টাকার ব্যবহার বন্ধ করতে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন করতে হবে।

 

অতিরিক্ত পোস্টার ব্যবহারে একদিকে যেমন কাগজের অপচয় হয়, অন্যদিকে তেমনি পরিবেশ নষ্ট হয়। কোন কোন প্রার্থী রাতারাতি পোস্টার দিয়ে সব জায়গা দখল করে ফেলে, যার ফলে সব প্রার্থীরা পোস্টার মারার সমান সুযোগ পান না।

 

যত্রতত্র জনসভা ও মাইকের ব্যবহার অতিমাত্রায় শব্দ দূষণ ঘটায় যা শিক্ষার্থীসহ সব শ্রেণীর মানুষের জন্য ক্ষতিকর ও বিরক্তিকর।

 

স্বাস্থ্য বিধির আওতায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সাবেক মন্ত্রী ও বিএলডিপি’র চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির হিরু, বাংলাদেশ ন্যাপ’র সাধারণ সম্পাদক এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি’র চেয়ারম্যান কে এম আবু হানিফ হৃদয়, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল মোর্শেদ, দলের ন্যাশনাল সিনেটের সদস্য এম এ মুঈদ হোসেন খান আরিফ, আসন্ন ঢাকা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী আনসার রহমান, ঢাকা-১০ আসনের সাম্প্রতিক উপ-নির্বাচনের বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী এ্যাডঃ মোঃ মিজানুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোঃ আয়াতুল্লাহ ওরফে আক্তারুজ্জামান, মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থাপর মহাসচিব নুরুল ইসলাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন।

নেতৃবৃন্দ মনে করেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা না থাকায় সৎ ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি তৈরী হচ্ছে না। পাপলুর মতো কালো টাকার মালিকরা টাকার বিনিময়ে জনপ্রতিনিধি বনে যাচ্ছে।

 

ফলে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। অসৎ ও দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশাসনে জেঁকে বসে বেপরোয়া ও স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছে।

 

ক্রস ফায়ার, খুন, গুম, ধর্ষণ, টাকা পাচারসহ সব ধরণের অপরাধ ও দুর্নীতি সংঘটিত হচ্ছে এসব জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের ছত্রছায়ায়।

 

যেনতেন প্রকারে নির্বাচিত হয়েই এসব জনবিচ্ছিন্ন জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের আখের গোঁজাতে ব্যস্ত হয়ে ওঠে। তাদের হাতে উপেক্ষিত থাকে দেশ ও দেশের জনগণ।

 

দুর্যোগের সময় ত্রাণ চুরির মহোৎসবে নামে তারা। দেশকে ভয়াবহ বিপর্যায়ের হাত থেকে বাঁচাতে হলে দরকার একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা। নির্বাচনকে প্রশাসনের প্রভাবমুক্ত করতে না পারলে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদৌ সম্ভব নয়।

 

এজন্য নির্বাচন ব্যবস্থার সংষ্কার জরুরী। নির্বাচন ব্যবস্থার সংষ্কারে সর্বদলীয় কমিটি গঠনের আহবান জানান বক্তারা।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30