দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে নিভৃত
পল্লীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র এক রক্ষতক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় আসামী পক্ষ ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের ২২ টি ঘর, ২২ টি ঘরের ২৫ টি কারেন্ট মিটার লুটপাটের অভিযোগ ওঠেছে।
সম্প্রতি বাড়িঘর লুট করার অভিযোগে উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক গ্রামের মৃত আজর আলীর পুত্র রবিউল হক সুনামগঞ্জ আমলগ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ৩৯ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন (সি আর মামলা নং ১১১/২০২০)
মামল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের দ্বীনেরটুক গ্রামে মাদরাসা সংক্রান্ত বিষয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একজন নিহত হন।
ওই ঘটনার পর বিবাদী পক্ষের বাড়িঘরে পুরুষশূন্য হয়ে পড়লে বাদী পক্ষের দুর্দান্ত দাঙ্গাবাজ, নির্যাতন ও নানা অপকর্মে লিপ্ত লোকজন হত্যা মামলার দ্ইু আসামীসহ তাদের আত্মীয় স্বজনের বাড়িঘর
সম্পূর্ণ লুট করে নিয়ে যায়।
এর কিছু দিন পরেই লুটপাটের সঙ্গে জড়িদের
মধ্যে ৪ বখাটে একই এলাকার এক নববধূকে জোড়পূর্বক ঘর থেকে বের করে রাতভর
গণধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর নিজেরা গণধর্ষণের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করায় বর্তমানে তারা জেলহাজতে রয়েছে (দোয়ারাবাজার থানার মামলা নং-০৯/১৬/০৬/২০২০)।
অভিযোগের এজহারে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা প্রাণঘাতি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে মহিলাদের অস্ত্রেরমুখে খালেদা বেগমের ৪টি গরু, ফিজ্র, হান্ডি বাসন-আসবাবপত্র, আলমিরা, স্বর্ণালংকারসহ নগদ ৭০ হাজার টাকা
ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এছাড়া তারা বসত ঘর ভাঙচুর করে চালার টিন খুলে নিয়ে যায়।
হত্যা মামলার আসামীদের ১০ টি দালান ঘর,১২ টি টিনসেটসহ ২২ টি ঘর ভাঙচুর করে সম্পূর্ণ লুট করে নিয়ে যায়।
অভিযোগকারী রবিউল হক বলেন, দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় মামলা
দেয়া হলে কয়েকজন জেল হাজতে এবং সকল আসামীরাই পলাতক রয়েছে।
এর জেরে বিবাদী পক্ষের একশ্রেণির সন্ত্রাসী ও দাঙ্গাবাজ লোকেরা বাড়ি থেকে নারী শিশুদের
ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের তান্ডব চালায়। হত্যা মামলার কোন আসামী না হলেও আমার ৫টি গরুসহ বসত ঘরের সম্পূর্ণ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
একই ভাবে মশাহিদ আলীর ঘর লুটপাট করে সম্পূর্ণ আসবাবপত্রসহ একটি অটোরিস্কা ও ৭টি গরু নিয়ে যায়। ইবরাহীম আলীর ঘর লুট করার পর ৫টি গরু ও তার ভাই সদ্ধ বিবাহিত জাহাঙ্গীর আলীর ২০ হাজার টাকা ১ টি আলমিরাসহ ১ টি সুফা সেট, শশুর বাড়ি থেকে দেওয়া ১,৫০০০০ টাকার মালামাল নিয়ে যায়, মুজাহিদ আলীর ২ টি গরু। আবুজাফর মাসুদের ৪ টি ঘরু ১ টি সুফা সেট। মামলার প্রধান আসামী মর্তৃজ আলীর ৪ টা গরু। অনেকগুলা বাগানের গাছ কেটে নিয়ে গেছে।
বাড়ির সব কিছু লুট করে নিয়ে যায়। ১০ টি দালান ঘরের ইট এখন আমাদের বাড়ির পাঁশের একটি ব্রিজের সামনের রাস্তায় মধ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমাদের ৩- ৪ কুটি টাকার জিনিস পত্র লুটপাট করে নিয়ে গেছে। পরনের কাপড়গুলু সব পুড়িয়ে দিয়েছে।
আমরা এখন পুরুষশূণ্য বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে জীবন যাপন করছি।
নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। যে কোনো সময় অভিযোগে উল্লেখিত ব্যক্তি ও তাদের
আত্মীয়-স্বজনরা আমাদের প্রাণে মেরে ফেলতে পারে। এমনকি আমরা আমাদের যে সকল আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে থাকছি তাদেরকেও হুমকি দিচ্ছে জুয়েল ও তার দলবল। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ
কামনা করছি। আমাদের ২২ টি ঘরের ২৫ টি মিটারসহ লুটপাটের শুস্থ বিচার যেন হয়।
তবে হত্যা মামলায় আসামী পক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের বিষয়ে খুনের মামলার বাদী জুয়েল আহমদ বলেছেন, আমাদের মামলার আসামী পক্ষের বাড়িঘর কে বা কারা ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে জানা নেই। তবে গ্রামের অসংখ্য নিরীহ মানুষকে অহেতুক মামলায় জড়িয়ে হয়রানী করছেন আমাদের পক্ষের লোকজন।
এছাড়া হত্যা মামলার আসামীদের কয়েকজন গ্রেপ্তার হলেও এখনো মূল আসামীরা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। আমি মামলার অন্যান্য আসামীদের দ্রæত গ্রেপ্তার ও খুনের সঠিক বিচার
চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজির আলম বলেন, যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে বিজ্ঞ আদালাতে মামলার প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।