২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

বাঙালি জাতির গৌরব একজন পুলিশ যখন লেখক

অভিযোগ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৪, ২০২০
বাঙালি জাতির গৌরব একজন পুলিশ যখন লেখক

 

সিলেট বিভাগীয় ব্যুরো, ফয়ছল কাদির ::

পুলিশ একজন তো সরকারী চাকুরীজীবি।আর তা যদি হয় একটা কর্মমুখর এলাকায়, ব্যস্ততম শহরের,মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্টে,তবে বুঝতে অসুবিধে নেই কতটা পরিশ্রম আর ক্লান্তিতে ডিউটির ৮ঘন্টা সময় কাটাতে হয়।

 

তাই কি শেষ- অফিশিয়াল সকল কাজ কর্ম শেষ করে নিজ অধীনস্থ সকল কর্মচারীর সুখ দুঃখ ভাগ করে রুমে ফিরতে হয়।এককথায় ব্যস্তময় জীবনের সকল ব্যস্ততা কাটিয়ে নিজের মনের খোরাক মেটানো একেবারেই অসম্ভব ।

 

আর এই অসম্ভব কে সফল করেছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। মনের খোরাক বলতে লেখালেখি। নানা অস্থিরতার মাঝেও স্বস্থির মনে লিখে চলেছেন অনবরত। অবাক হওয়ার বিষয় হলো সেই লেখাগুলো যদি হয় মুক্তিযুদ্ধ কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেন্দ্রিক তবে একটু আশ্চর্য হওয়ার কথা। কেননা অনেক ডকুমেন্টস প্রয়োজন। লেখা হতে হবে স্বচ্ছ ও গুণগত। আর ঐ গুনী লেখক তাই করছেন।শত বাঁধা অতিক্রম করে নিজের আপন ভূবণে জায়গা করে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

 

লেখালেখির পাশাপাশি দায়িত্বেও তিনি বীর ও সৎ সাহসী দক্ষ এবং মেধাবী পুলিশ অফিসার।তিনি বর্তমানে সিলেট মেট্রোপলিটনের ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্টের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন । দেখা যায় সারাদিন রাস্তায় দাঁড়িয়ে রোদ বৃষ্টি ও ঝড়ের মধ্যেও তাহার পুলিশি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং করোনা মহামারীর সময়েও তাহার পুলিশি দায়িত্বে কোন ত্রুটি হয়নি সেই সময়টিও আমাদের চোখের দেখা ।

 

কিন্তু এই প্রথম শুনলাম যে সার্জেন্ট শরিফুল হাসান পুলিশের চাকরির এতো বড় একটি দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও তিনি তিনটি বই লিখেছেন বইগুলোর নাম হচ্ছে (১) রক্তাক্ত পনের আগস্টের শহীদেরা (২) মুক্তির আলো (৩) বঙ্গবন্ধুর শৈশব কৈশোর ও শিক্ষাজীবন এবং তিনি আরো দুইটি বই লিখতেছেন বইগুলোর নাম হচ্ছে (১) মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের গৌরব গাথা (২) বঙ্গবীর জেনারেল ওসমানীর জীবনী, এই দুটি বই এ বছরেই প্রকাশ করবেন বলে বলে আমাদেরকে জানিয়েছেন পুলিশ সার্জেন্ট শরিফুল হাসান ।

 

লেখক শরিফুল হাসান শিশির- ফেইসবুকে তিনি স্বপ্নিল শিশির নামে পরিচিত। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক কোর্সের গণিত বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতির সাথেও সম্পৃক্ত ছিলেন। এখানেও তিনি পিছিয়ে নয়-সফলতার সাথে উক্ত রাজনৈতিক সংগঠনের শীর্ষ পদে নেতৃত্বও দিয়েছেন।শরিফুল হাসান শিশির প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ একজন বাঙালী।

 

ছাত্রজীবন থাকাকালীন সময়ে তাঁর লেখালেখির সূচনা হয়।২০০৮-১১সাল পর্যন্ত পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স এর গণিত লেখক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।২০১২সালে আল ফাতাহ পাবলিকেশন্স এর আর এন্ড ডি অফিসার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি ইউকে,ইউএস,কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার সাথে উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যাবসাও করেছেন বহুবছর।

 

২০১৫সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর ট্রেনিংয়ে মনোনীত হোন তিনি।বর্তমানে কর্মরত আছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে।অনলাইনে লেখালেখি শুরু করেন ২০১১সাল থেকে।২০১১থেকে ১৪সালের পুরোটা সময়ে স্বপ্নিল শিশির নামে ফেইসবুক জগতে পরিচিতি লাভ করেন লেখক হিসাবে।

 

ঐ সময়ে তিনি ইংলিশে বই লিখতেন যা বর্তমানেও আমাজনে পাওয়া যাচ্ছে। মূলতঃ বাংলা ভাষায় লেখালেখি শুরু করেন বাংলাদেশ পুলিশে যোগদানের পর থেকে।ফেইসবুককে তিনি বাংলাদেশের সিটিজেন জার্নালিজমের মূল প্লাটফর্ম হিসেবে দেখেন।এবং বহুদিন ধরে এই অনলাইন প্লাটফর্ম ব্যবহার করছেন ।বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম ও প্রশংসাজনক উদ্যোগকে জনগণের সামনে তুলে ধরার মহৎই কাজ করে যাচ্ছেন ফেইসবুক সুবাধে নিঃস্বার্থভাবে।

 

শরিফুল হাসান শিশির ২০১৬ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন।বর্তমান তিনি স্বপরিবারে সিলেটে বসবাস করছেন।তিনি লেখালেখি করছেন বেশ হাসিমুখে।

 

এই গুণী লেখকের ২০২০সালের একুশে বই মেলায় তাঁর স্বরচিত তিনটি বই প্রকাশিত হয়েছে এবং আত্মপ্রকাশ ঘটে প্রকাশিত গ্রন্থের লেখক হিসেবে।

 

এবং এবারের ২০২১ বইমেলাতেও তার দুটি বই বের হচ্ছে।বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এরকম এক জন করে যদি পুলিশ অফিসার ও লেখক তৈরি হতো তাহলে বাঙালি জাতির ও পুলিশের সম্মান আরও উজ্জ্বল হতো ।ধন্যবাদ জানাই ট্রাফিক পুলিশ সার্জেন্ট ও লেখক শরিফুল হাসান কে ।

Please Share This Post in Your Social Media
April 2024
T W T F S S M
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30