যৌথসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ● অভিযোগ
অভিযোগ ডেস্ক : দেশ ও দলের অনেক কাজ আছে, খালেদা জিয়ার বিষয়ে বারবার কথা বলার সময় নেই আওয়ামী লীগের। এমন মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বিষয়টি পুরোটিই আদালতের বিষয়। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগের কাছে বারবার জানতে না চেয়ে বিব্রত না করার আহবান জানান তিনি।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা বিভাগের সকল সাংগঠনিক জেলা ইউনিটের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও দলীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংগঠিক দুর্বলতার কারণে ঢাকা সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। আগামীতে নির্বাচনে উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি যদি কোনও ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কোনও কারণে মন্দা দেখা দেয়, তার প্রভাব সারা বিশ্বেই থাকে। কভিডভাইরাস আমাদের অর্থনীতিতে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে সেই অবস্থা এখনও আসেনি। এটা যদি বেশি দিন থাকে তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছি না।
কভিডভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে হলে পদ্মা সেতুর কাজে কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, পদ্ধা সেতুতে আড়াইশ চীনের কর্মী, শ্রমিক স্বদেশে ছুটিতে গেছেন নববর্ষে। তারা এখনও আসেনি। কভিডভাইরাসের যে প্রতিক্রিয়া তারপরও তিনটি স্প্যান আমাদের বসে গেছে।
আগামীকালও একটি স্প্যান বসার কথা। যারা ছুটির কারণে চীনে আছেন আগামী আড়াই মাসের মধ্যে তারা ফিরে না আসলে একটু সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তবে আগামী দুই মাসের কাজের কোনও ক্ষতি হচ্ছে না।
যৌথসভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লেফটেনেন্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, আবদুর রহমান, শাজাহান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাম, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মোহাম্মদ মন্নাফি, পানি সম্পাদ প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যৌথসভায় দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলোর সম্মেলনগুলোকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে জানিয়ে এপ্রিল থেকে পুরোদমে এই পরিক্রমা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, আমরা মোট ২৯টি সম্মেলন করেছি। এর মধ্যে দুটি ঢাকা সিটির। কিন্তু ঢাকা বিভাগে এ পর্যন্ত কোনও সম্মেলন হয়নি। শেখ হাসিনার বড় নির্দেশনা হচ্ছে দলকে সাজাতে হবে। সাংগঠনিকভাবে সৃশৃঙ্খল এবং সংগঠনকে সময়ের চাহিদা মেটানো আমাদের অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দল ক্ষমতায় থাকায় সাংগঠনিক দুর্বলতা টের পাচ্ছেন না।
অনেক জায়গায় দেখা যায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হয়ে আছেন। ৮-১০ বছর হয়ে গেছে আর কেউ নাই। পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। আবার অনেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দিচ্ছে অনুমোদন পেতে পেতে ছয় মাস। সম্মেলন করতে বললে বলেন, আমাদের তো মেয়াদ শেষ হয়নি। সম্মেলন যেদিন থেকে হবে ক্ষণ গণনা সেদিন থেকে হবে। কেন্দ্রীয় সম্মেলন থেকে শিক্ষা নেন।
তিনি বলেন, কমিটি করতে গিয়ে নিজের লোক পকেটে ঢুকাবেন না। এতে দলের কোনও লাভ হবে না। দল ভারী করার জন্য আজকে বিতর্কিত ব্যক্তিদের আনবেন না। এপ্রিল থেকে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা ঢেলে সাজাবেন। এরপর জেলাগুলোর সম্মেলন হবে। ঘরে বসে কমিটি করবেন না এই কালচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এতে দল শেষ হয়ে যাবে। সম্মেলন ছাড়া কোনও কমিটি করা যাবে না। অনেক সময় জেলার নেতৃবৃন্দ উপজেলা, ইউনিয়ন কমিটি ভেঙে দিয়েছেন। এটা হবে না। কেন্দ্রর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া কোনও কমিটি ভাঙা যাবে না। কমিটি ভাঙতে হলে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করবেন। নেত্রী পর্যন্ত বিষয়টি গড়াবে।
সেখানেই ফাইনাল সিদ্ধান্ত হবে, কমিটি ভাঙার জন্য আপনার সুপারিশ যথাযথ কি না? কোনও কারণে আপনার সাথে বনিবনা হলো না যে কাউকে বহিষ্কার করে দিলেন। এভাবে বহিষ্কার করা যাবে না। কমিটি নিয়ে বসতে হবে। কমিটির কাছে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ করতে পারেন। কিন্তু সরাসরি বহিষ্কার করতে পারবেন না।